প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, জাতির পিতার হাত ধরে বাংলাদেশের বিচারকাঠামো গঠিত হয়েছে। মানবাধিকার, ন্যায়বিচার, কৃষি, শিল্প, স্বাস্থ্য সবকিছু তিনি করে গেছেন। সমুদ্র সীমা বাড়ানোর ক্ষেত্র প্রস্তুত করেছিলেন। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারও তিনি শুরু করেছেন।
শনিবার (২১ অক্টোবর) রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আইনজীবীদের মহাসমাবেশে এ সবকথা বলেন তিনি। আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের সভাপতিত্বে সমাবেশে সারাদেশ থেকে আগত আইনজীবীরা অংশ নেন।
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী আইনজীবীদের কাছে দাবি রেখে বলেন, আস্তে আস্তে আর্থিক সচ্ছলতা আসলে আপনাদের স্বল্পমূল্যে জমি বরাদ্দ দেবো। তবে একটা শর্ত আছে, অগ্নিসন্ত্রাসের সঙ্গে যারা জড়িত, সেই মামলাগুলো দ্রুত শেষ করতে হবে। এটাই আমার অনুরোধ এবং দাবি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি অবাক হয়ে যাই যে একজন মানুষ কীভাবে এক জীবনে এতগুলো কাজ করতে পারেন। যে স্বাধীনতার স্বপ্ন দেখেছিলেন জাতির পিতা, যে স্বাধীনতার স্বপ্ন নিয়ে আমরা ক্ষমতায় এসেছি, সেই স্বাধীনতার স্বপ্ন আমরাই বাস্তবায়ন করেছি।
জিয়াউর রহমানের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, জিয়াউর রহমান শুধু ইনডেমনিটি অধ্যাদেশই নয়, নির্বাচনী ব্যবস্থা নষ্ট করা, হ্যাঁ-না ভোটে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন করা। সে নির্বাচনে সামরিক আইন ও বিধান ভঙ্গ করে নিজেই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।
এর আগে, বেলা ১১টায় বার কাউন্সিলের ১৫ তলা বিশিষ্ট ভবনের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। ১৪২ কোটি টাকা ব্যয়ে অত্যাধুনিক সুযোগ-সুবিধা সংবলিত ১৫ তলা বিশিষ্ট ভবনটি নির্মিত হয়। ভবনটিতে চারটি লিফট, ফায়ার ফাইটিং ব্যবস্থা, সিসি ক্যামেরা, শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা এবং পুরুষ-নারী-প্রতিবন্ধীদের জন্য পৃথক শৌচাগার রয়েছে।
আইন ও বিচার বিভাগের তত্ত্বাবধানে, গণপূর্ত অধিদপ্তরের ব্যবস্থাপনায় ও স্থাপত্য অধিদপ্তরের নকশায় নির্মিত ভবনটিতে পর্যাপ্ত অফিস স্পেস, মিটিং রুম, দুটি কনফারেন্স রুম, রেকর্ড রুম, স্টোর রুম, ওয়েটিং এরিয়া, ক্যাফেটেরিয়া, ডে-কেয়ার সেন্টার, এক্সিবিশন স্পেস, রিসিপশন, রেজিস্ট্রেশন রুম, ব্যাংক, অ্যাকাউন্স সেকশন, আইটি সেকশন ইত্যাদি রয়েছে। আইনজীবীদের জন্য প্রশিক্ষণ কক্ষ, পাঁচটি ট্রাইব্যুনাল কক্ষ, সুপরিসর মাল্টিপারপাস হল, নারী ও পুরুষের জন্য পৃথক নামাজ কক্ষ রয়েছে।
এ ছাড়া টিভি লাউঞ্জ, কিচেন ও ডাইনিং হলসহ শতাধিক আইনজীবীর থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে। প্রকল্পে আরবরিকালচারের মাধ্যমে ল্যান্ডস্কেপিং করা হয়েছে। নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য সাবস্টেশন ও জেনারেটরের মাধ্যমে পৃথক বৈদ্যুতিক লাইন সংযুক্ত করা হয়েছে।
আগামীকাল রোববার বিকেল ৪টায় একাদশ জাতীয় সংসদের শেষ অধিবেশন বসছে। সম্প্রতি রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন তার সাংবিধানিক ক্ষমতা বলে এ অধিবেশন আহ্বান করেছেন।
জাতীয় সংসদ সচিবালয় থেকে জানানো হয়, এই অধিবেশনটি একাদশ জাতীয় সংসদের ২৫তম ও ২০২৩ সালের পঞ্চম। চলতি সংসদের এটিই শেষ অধিবেশন হতে যাচ্ছে।
২০১৯ সালের ৩০ জানুয়ারি প্রথম অধিবেশন বসেছিল।
এর আগে, গত ৩ সেপ্টেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদের ২৪তম অধিবেশন শুরু হয়ে ১৫ সেপ্টেম্বর শেষ হয়। সংসদে ৩৫টি বিল তোলা হয়। পাস হয় ১৮টি বিল।
উল্লেখ্য, অধিবেশন শেষ হওয়ার পর আগামী নভেম্বর মাসে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। আর আগামী জানুয়ারি মাসের প্রথমার্ধে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।